স্থাপত্য পরিকল্পনা ও ডিজাইন। 

(বাসগৃহ পরিকল্পনা ও ডিজাইন)

ডিজাইন পরিকল্পনাঃ 

বাড়ি নির্মাণের শুরুতেই প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও ডিজাইন। একজন আর্কিটেক্ট এবং একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সয়েল টেস্ট করার পর অনুমোদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুযায়ী এই কাজটি করে থাকেন। 

এছাড়াও একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের সাহায্যে বাড়ির ইলেকট্রিক্যাল কাজের ডিজাইন করিয়ে নেওয়া উচিত।

বাড়ি পরিকল্পনার শুরুতেই আর্কিটেক্ট এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বাড়ি ডিজাইনের জন্য বাড়ি নির্মাতার যেসব বিষয়গুলো বিবেচনায় আনেন তা হলো - 

• বাড়ির প্রস্তাবিত সাইটের অবস্থান এবং আলো, বাতাস তথা আবহাওয়ার প্রভাব; 

• বসবাসকারীদের জীবন-যাপনের ধরণ ও প্রয়ো জনীয়তা সমূহ: 

• বাজেট;

• নকশা অনুমোদনকারী নগর কর্তৃপক্ষের নিয়মাবলি: 

• নির্মাণ উপকরণ ও নির্মাণ পদ্ধতি:

আর্কিটেকচারাল ডিজাইন (স্থাপত্য নকশা)ঃ

একজন আর্কিটেক্ট বাড়ির নকশা প্রণয়ণ করেন এবং তার নকশায় মূলত যেসব বিষয়গুলো বিবেচনা করেন সেগুলো হল: 

→ জমির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কিনা, জায়গার সুষ্ঠ বিন্যাস; 

→ ন্যাচারাল লাইটিং এবং আর্টিফিশিয়াল লাইট এর যথাযথ প্রয়োগ: 

→ বিল্ডিং-এর ভেতর আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা;

→ বিল্ডিং-এর সিকিউরিটি ও প্রাইভেসি বিবেচনা;

→ নির্মাতার ব্যবহারিক প্রয়োজন অনুযায়ী রুমের সাইজ, সজ্জা ও বিন্যাস:

→ বিল্ডিং-এর নান্দনিক বিষয়সমূহ:



স্ট্রাকচারাল ডিজাইন (কাঠামো নকশা)ঃ 

নিরাপদ, মজবুত এবং স্থায়ী বিল্ডিং নির্মাণে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর্কিটেকচারাল প্ল্যান শেষ হলেই একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার বাড়ির মূল

কাঠামো ডিজাইন করেন, তিনি মূলত যে বিষয়গুলো বিবেচনায় আনেন- 

• কংক্রিটের শক্তি কেমন হবে এবং সেই অনুযায়ী মিক্সিং অনুপাত ফাউন্ডেশনের পাইলিং লাগবে কিনা এবং পাইল ডিজাইন:

• প্রতিটা সেকশনে কি পরিমাণ রড লাগবে; 

• কিভাবে রড বসবে; 

• ফর্মা কেমন হবে; 

• কলামের রডের স্পেসিং বা ফরমেশন; 

• ভূমিকম্প ও দুর্যোগ সহনীয় নির্মাণে কি পরিমাণ রড লাগবে;

• ডিজাইন অনুযায়ী বিল্ডিং-এর এস্টিমেশন; 

পরবর্তীতে পুরো নির্মাণ ব্যবস্থাপনায় আর্কিটেকচার এবং স্ট্রাকচারাল পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করা হয় ।

আর্কিটেক্ট এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আপনার প্রয়োজন বুঝেই ডিজাইন করার চেষ্টা করেন, তাই তাদের সাথে পরামর্শ না করে কোনো অংশ পরিবর্তন করা যাবেনা। 

 ডিজাইনে বিল্ডিং কোডের গুরুত্বঃ

সবধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার নিয়মাবলী আছে বিল্ডিং কোডে। তবে এই কোডের ব্যবহারিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারবেন একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। বিল্ডিং কোড টেকনিক্যাল বিষয়। অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা এটি পড়ে সেই অনুযায়ী কাজ করেন। এক্ষেত্রে তাই ভবন মালিকদের দায়িত্ব হলো ভবিষ্যতের ঝুঁকি এড়াতে স্থাপনা নির্মাণের কাজে অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের সাহায্য নেওয়া।

 অকুপেন্সি সার্টিফিকেটঃ 

"নিরাপদ" ভবন তৈরি করার ক্ষেত্রে 'অকুপেন্সি সার্টিফিকেট' জরুরি বিষয়।

বাড়ি তৈরির পর একজন অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর অনুমোদিত অকুপেন্সি সার্টিফিকেট অবশ্যই নিতে হবে।

যে কাজের জন্য কোন নির্দিষ্ট ভবন তৈরি করা হয়েছে, তা ওই কাজের জন্য নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার সনদই হল অকুপেন্সি সার্টিফিকেট। 

ভবন তৈরির চুক্তি করার সময়ই চুক্তিতে অকুপেন্সি সার্টিফিকেটসহ ভবনের গুণগত মান নিশ্চিত করে দেওয়ার শর্ত যোগ করে দেওয়া দরকার।

বিল্ডিং নির্মাণের প্রতিটি ধাপেই অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ও আর্কিটেক্টের পরামর্শ নিন। এতে যেমন সময় এবং অর্থ সাশ্রয় হবে, পাশাপাশি নিরাপদ নির্মাণের সব দিক নিশ্চিত করা যাবে।



ক্রেডিটঃ শাহ্‌ সিমেন্ট।